কবি চূড়ামণি দাস ও তাঁর কাব্য গৌরাঙ্গবিজয় কাব্যের কথা
কয়েকখানি চৈতন্যচরিত গীতিকাব্য ‘পাঁচালী প্রবন্ধ' রীতিতে রচিত হয়েছিল। তার মধ্যে একটি অংশতঃ, আর একটি সম্পূর্ণ। চূড়ামণি দাসের ‘গৌরাঙ্গ বিজয়’ কাব্যটি অসম্পূর্ণ। সম্ভবতঃ সপ্তদশ শতকের শেষার্ধে গ্রন্থটি লেখা হয়। আদি, মধ্য, অস্ত্য খণ্ডে গ্রন্থটির কথা ও কাহিনী বিভক্ত। লাচাড়ি অংশের তুলনায় ‘শিকলি' অংশই বেশি। নিত্যানন্দ অনুচর ধনঞ্জয় পণ্ডিতের অনুপ্রেরণায় কবির কাব্যসৃষ্টি। চূড়ামণি দাসের উদ্দেশ্য চৈতন্য-সংসারের চিত্রায়ণ। নিত্যানন্দের জ্ঞাতিশত্রু আখণ্ডল আচার্যের বর্ণনা ও কবির বাস্তবানুসিদ্ধ অভিজ্ঞতার অভিজ্ঞান—
“আখণ্ডল আচার্য আইলা হেনবেলা
কথাগুলা কএ যেন বোড়া সাপের জ্বালা।...
অকার্য গ্রাহক যে অবাচ্যে তোল বাণী
কাটিয়া ত বড় নালা ঘরে আন পাণী।”
তাঁর কাব্যে গানগুলিতে ব্রজবুলির ব্যবহার দৃশ্যমান। তিনি চৈতন্যকে অবতাররূপে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন নি। যে জনসাধারণের দৃষ্টিতে চৈতন্য ‘অবতার’ তাঁদের জন্যই বইটি লেখা হয়েছে।